cropped-cropped-BD-Travels-01-Copy.png

ট্রলারে সেন্টমার্টিন ভ্রমন

আমি আগেও গিয়েছিলাম কিন্তু ট্রলারে কখনোই যাইনি তাই ভাবলাম এবার এই স্বাদ টাও নিয়ে ফেলা যাক। বরাবরের মতোই ফয়েজ কে নক দিলাম ।
ফয়েজ হলো (চলো বেড়িয়ে পড়ি ) গ্রুপে র এডমিন। যাইহোক প্ল্যান প্রোগ্রাম শুরু হয়ে গেলো ট্রলারে করে দারুচিনি দ্বীপ এ পা রাখার।
 
সকালে টেকনাফ ট্রলার ঘাটে। পৌছে দেখি ফয়েজ টিকিট কেটে আমাদের জন্য অপেক্ষা করছে কারণ বাকী সবাই আগেই এসে পড়েছিল। সবাই লাইন ধরলাম ট্রলারে ওঠার জন্য ।
এবং লক্ষ্য করলাম কি নেই এখানে। সবজির বস্তা, ডিমের খাচি, মুরগির খাঁচা পর্যন্ত লাইনে দাঁড়িয়ে আছে। আমি বুঝলাম ভুল করেছি ট্রলারে এসে। লোকাল জানতাম কিন্তু এতোই লোকাল তা বুঝিনি। অনেক কষ্টে গিয়ে উঠলাম ট্রলারে কিন্তু একি বসবো কোথায় ফয়েজ বললো আপু জায়গা পেলেই বসে যান।
বসে যাবো মানে ???
কোথায় বসবো ??? আজব 🙄🙄🙄আমার মন যখন এসব ভাবছে তখন আমার সামনে পিছনে সবাই ধুপধাপ বসে পড়ছে। নিরুপায় হয়েই বসতে বসতে দ্বিতীয় বারের মতো বুঝলাম কি ভুলটা করেছি ট্রলারে এসে।
চারপাশে সবার হাউমাউ কাউ কাউ আর উপরে মাথা ফাটা রোদ। আবার বৃষ্টি হলে আরো বিপদ। এলোমেলো আর বিচ্ছিন্ন মনোভাব নিয়ে একটা কাঁচা মরিচ এর বস্তার উপরে বসে আছি । চলতে শুরু করলো ট্রলার। চারিদিকে সচ্ছ পানি, মাথার উপর দিয়ে ঝাঁক ঝাঁক চিল ঐঐঐ দূরে অস্পষ্ট পাহাড়। প্রথম বারের মতো মনে হলো না হহহহ ভালোই করেছি ট্রলারে এসে ।  এভাবেই চারপাশের সৌন্দর্য কখন আমাদের ঘন্টা কেড়ে নিল জানিনা মাঝি সবাই কে ‘লাইভজ্যাকেট’ দিতে শুরু করলো। বুঝলাম এতোখন সমুদ্রের বাইরে ছিলাম এখন সমুদ্রে পড়বে ট্রলার।
 
হঠাৎ  করেই পানির রঙ বদলে যেতে শুরু করলো। স্বচ্ছ পানির ধারা নীল থেকে সবুজাভ হয়ে উঠলো। যেদিকে তাকাই শুধু পানি আর পানি । হালকা ঢেউয়ের সাথে ভাসতে থাকা ট্রলারের পাটাতনে বসা একজন ক্ষুদ্র মানুষ আমি কিন্তু নিজেকে কখনো সিন্দবাদ তো কখনো পাইরেটস মনে হচ্ছিল।

মাঝে মাঝেই ঠান্ডা পানির ঝাপটা এসে ভিজিয়ে দিচ্ছে একটুখানি। নীল জলের শীতল স্পর্শে গেয়ে উঠতে ইচ্ছে করে কোথাও আমার হারিয়ে যাওয়ার নেই মানা ————————-

এবং সবটুকু উপলব্ধির সাথে অনুভব করলাম ভাগ্যিস ট্রলারে এসেছিলাম। নীল আকাশ ঝকঝকে রোদ সবুজাভ নীল জলরাশির মাঝে হঠাত্ করেই ভেসে উঠলো এক টুকরো গাঢ় সবুজ ।
বুঝতে বাকি নেই যে ওটাই দারুচিনি দ্বীপ।